আখাউড়া(ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:
প্রতিটি শিশু দোকান থেকে রকমারি খাবার খেতে পছন্দ করে। সেই অনুযায়ী শিশুরা দোকান পাঠ থেকে নানা রকম খাবার খেতে টাকা পয়সা খরচ করছেন। ঠিক ওই সময় মো: আমজাদ হোসেন (১০) নামে এক মাদরাসা পড়–য়া ছাত্র জমানো খাবারের টাকা ওয়াজ মাহফিলে দান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। আমজাদ হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের বড় বাজারস্থ দারুল কুরআন হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা নুরানী বিভাগের শিশু শ্রেণির ছাত্র। সে সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের বরিশল গ্রামের মো: আব্দুল আওয়াল মিয়ার ছেলে। মাহফিলের প্রতি ভালোবাসা ও আন্তরিকতা থাকায় দীর্ঘ দিন ধরে প্লাস্টিকের ব্যাংকে জমানো ৬৩০ টাকা বুধবার মাদরাসার শিক্ষকের হাতে তুলে দেন।
এ সময় মাদরাসার অন্যান্য শিক্ষকদের পাশাপাশি পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাজী বিল্লাল হোসেন ও তার পিতা আব্দুল আওয়াল উপস্থিত ছিলেন। শিশু ছাত্র কর্তৃক মাহফিলে সহযোগিতার করতে এ ব্যাংক হাতে তুলে দেওয়ায় এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগামী ১২ নভেম্বর দারুল কুরআন হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় ৫ম বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ওই মাহফিলে দেশের প্রখ্যাত আলেমরা আসছেন। গতকাল মঙ্গলবার মাদরাসার শিক্ষক মাও: আইয়ুব আলী ছাত্রদেরকে যার যার বাড়িতে মাহফিলের দাওয়াত পৌঁছে দিতে বলেন। পাশাপাশি যার যার সামর্থনুযায়ী টাকা পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করতে বলা হয়। শিক্ষকের এই কথা শুনে সে একটি প্লাস্টিকের ব্যাংক মাদরাসায় নিয়ে আসে।
শিশু ছাত্র মো: আমজাদ হোসেন বলেন, প্রতিদিন মাদরাসায় আসা যাওয়া করতে তার বাবা হাত খরচ হিসাবে কিছু টাকা আমাকে দিচ্ছেন। ওই টাকা আমি একটি প্লাস্টিকের ব্যাংকে জমা করছি। মাহফিলে এক ছাত্র বাড়িতে প্লাস্টিকের ব্যাংকে জমানো টাকা দিয়ে সহযোগিতা করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এরপর কয়েক দিন আগে আমিও নিয়ত করেছি কোন সুযোগ আসলে সওয়াবের আশায় পুরো ব্যাংকটি দান করব। তাই মাহফিলে সহযোগিতা করতে আমি প্লাস্টিকের ব্যাংকটি মাদরাসার হুজুরের কাছে তুলে দিয়েছি।
মাদরাসার শিক্ষক মাও: আইয়ুব আলী বলেন শিশু আমজাত এই মাদরাসার নুরানী বিভাগের একজন ছাত্র। মাদরাসার বার্ষিক মাহফিলে সহযোগিতা করতে এই ছাত্র নিজ জমানো একটি প্লাস্টিকের ব্যাংক নিয়ে আসেন। ওই ব্যাংকটি সকলের উপস্থিতিতে ভাঙ্গা হলে এতে ৬২০ টাকা পাওয়া যায়। আমি দীর্ঘ দিন ধরে মাদরাসায় আছি। কিন্তু কোন ছাত্র কর্তৃক এভাবে সহযোগিতা করতে দেখিনি। দোয়া করি মহান আল্লাহ্ তায়ালা যেন এই দানকে কবুল করে ।
মাদরাসার সাধারণ সম্পাদক হাজী বিল্লাল হোসেন বলেন, শিশু ছাত্র হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে মাদরাসার মাহফিলে সহযোগিতা করতে প্লাস্টিকের ব্যাংক তুলে দেওয়ায় এলাকায় এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।